আলফ্রেড রাসেল ওয়ালেস

ঊনবিংশ শতকে প্রাণীদের ভৌগোলিক বণ্টন বিষয়ে তাকে সবচেয়ে বিজ্ঞদের একজন মনে করা হতো এবং অনেক সময় তাকে জীবভূগোলের জনক বলা হয়। পাশাপাশি ঊনবিংশ শতকের শীর্ষ বিবর্তন বিষয়ক চিন্তাবিদ ও গবেষকদের মধ্যে তিনি অন্যতম। যৌথ কিন্তু স্বাধীনভাবে প্রাকৃতিক নির্বাচন আবিষ্কার ছাড়াও বিবর্তনীয় তত্ত্বের উন্নতিতে তার অনেক অবদান রয়েছে। যেমন, প্রাণীদের মধ্যে সতর্কীকরণ রঙের ধারণা, ওয়ালেস ক্রিয়া- প্রাকৃতিক নির্বাচন কীভাবে সংকরীকরণের বিরুদ্ধে বাঁধা তৈরির মাধ্যমে প্রজাতির উৎপত্তিতে ভূমিকা রাখতে পারে সে বিষয়ক একটি অণুকল্প।
ওয়ালেস জীবনে অনেক প্রথাবিরুদ্ধ ধারণা সমর্থন করেছেন। আধ্যাত্মিকতার পৃষ্ঠপোষকতা এবং মানুষের সবচেয়ে উন্নত মানসিক দক্ষতাগুলোর অবস্তুগত উৎসে বিশ্বাস করায় সমকালীন বিজ্ঞানী সমাজের সাথে তার সম্পর্কের টানাপোড়েন দেখা দিয়েছিল। বৈজ্ঞানিক কাজের পাশাপাশি তিনি সমাজকর্মী হিসেবেও কাজ করেছেন, তিনি ঊনবিংশ শতকের ব্রিটিশ অর্থনৈতিক ব্যবস্থা তথা পুঁজিবাদের সমালোচনা করতেন। প্রকৃতির ইতিহাস বিষয়ে উৎসাহী হওয়ায় তিনি ছিলেন মানুষের দ্বারা পরিবেশের দূষণের ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশকারী প্রথম বিজ্ঞানীদের একজন।
ওয়ালেস একজন প্রসিদ্ধ লেখক, বৈজ্ঞানিক ও সামাজিক দুই বিষয়েই তিনি সিদ্ধহস্ত ছিলেন। সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া তে ভ্রমণ নিয়ে তার লেখা ''দ্য মালয় আর্কিপেলাগো'' সম্ভবত ঊনবিংশ শতকে প্রকাশিত বৈজ্ঞানিক অভিযান বিষয়ক সেরা বই।
জীবনের অধিকাংশ সময় জুড়েই ওয়ালেসের আর্থিক কষ্ট ছিল। আমাজন এবং দূরপ্রাচ্যে ভ্রমণের অর্থ তিনি জোগাড় করতেন মূলত বিভিন্ন দুর্লভ প্রাণীর নমুনা সংগ্রহ ও বিক্রির মাধ্যমে। কিন্তু ব্যর্থ বিনিয়োগের কারণে এই ব্যবসার অধিকাংশ উপার্জনই তিনি হারাতে বাধ্য হন। এরপর তার আয়ের প্রায় একমাত্র উৎস ছিল লেখালেখি। সমকালীন ব্রিটিশ বিজ্ঞানী সম্প্রদায়ের অন্য অনেকের (যেমন ডারউইন এবং চার্লস লায়েল) মত উত্তরাধিকার সূত্রে তার বিশাল সম্পত্তি ছিল না। এমনকি কোন দীর্ঘমেয়াদি আয়ের উৎসও তিনি খুঁজে পাননি। ১৮৮১ সালে ডারউইন তার জন্য একটি সামান্য সরকারি ভাতার ব্যবস্থা করে দেয়ার আগ পর্যন্ত তার কোন নিয়মিত আয় ছিল না। উইকিপিডিয়া দ্বারা উপলব্ধ